------------------------ Welcome to my site

Owner MD. Shek Rostom

Sunday, June 27, 2021

Saturday, June 26, 2021

Wednesday, June 16, 2021

ঢাকা ১৯৭১: বাংলাদেশের প্রথম পতাকা এবং একটি পরিবারের কাহিনী

 

আপনি কুকিগুলো ব্যবহারের সম্মতি দিচ্ছেন সেটা আমাদের জানান।

আমরা কুকি ব্যবহার করি যাতে অনলাইনে আপনার বিচরণ স্বচ্ছন্দ হয়।সবগুলো কুকি ব্যবহারের জন্য আপনি সম্মতি দিচ্ছেন কিনা জানান।


ঢাকা ১৯৭১: বাংলাদেশের প্রথম পতাকা এবং একটি পরিবারের কাহিনী

ঢাকা ১৯৭১: ধানমন্ডির কাছে রাস্তায় পাকিস্তানি ট্যাংক

ছবির উৎস, ছবি: নাজমা কবিরের সৌজন্যে

ছবির ক্যাপশান,

ঢাকা ১৯৭১: ধানমন্ডির কাছে রাস্তায় পাকিস্তানি ট্যাংক

উনিশ শ' একাত্তরের মার্চ মাসের শেষ দিকে ঢাকা এবং বাংলাদেশের অন্যত্রও অনেক বাড়িতে ওড়ানো হয়েছিল বাংলাদেশের পতাকা। কিন্তু ২৫ শে মার্চ রাতে ঢাকায় পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞ শুরু হবার পর সেসব পতাকা নামিয়ে ফেলার জন্য মাইকিং করা হচ্ছিল।

যারা প্রাণভয়ে সেই রাতেই পতাকা নামিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছিলেন - তাদের একজন নাজমা কবির। ১৯৭১ সালে তিনি ছিলেন কলেজপড়ুয়া ১৭ বছরের তরুণী।

তাদের বাড়িটি ছিল ধানমন্ডির ২৯ নম্বর সড়কে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা শেখ মুজিবর রহমানের ৩২ নম্বর সড়কের বাড়ির অল্প দূরেই।

"অনেক রাত, তিনটে-চারটা তো হবেই। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের পরই আমরা বাড়ির ছাদে বাংলাদেশের যে পতাকা টাঙিয়েছিলাম - তা খুলে ফেলার জন্য মাইকিং হচ্ছিল " - বিবিসি বাংলাকে এক সাক্ষাৎকারে বলছিলেন বর্তমানে লন্ডন-প্রবাসী নাজমা কবির।

"বলা হচ্ছিল, পতাকা না নামালে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়া হবে।"

উপায়ান্তর না দেখে ঠিক হলো পতাকা নামিয়ে ফেলা হবে - তখন তিন বোনের মধ্যে নাজমাকেই সেটা নামাতে বললেন তার বাবা।

ফেসবুকে নাজমা কবির সেই ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে লিখেছেন, "সিঁড়িও নেই, এত রাতে কি ভাবে ঐ ইঁট বেয়ে উপরে উঠব? কে উঠবে? বাবা আমাকে জিগ্যেস করলেন পারবো কি না। "

"সাহস নিয়ে বললাম, 'পারবো'। উপায় নেই, নয়ত কে যাবে?"

নাজমা কবির

ছবির উৎস, নাজমা কবির/ফেসবুক

ছবির ক্যাপশান,

নাজমা কবির

"কি ভয়ঙ্কর সেই স্মৃতি! উপরে উঠে দেখি চারিদিকে আগুন। তখনকার দিনে ধানমণ্ডিতে উঁচু দালান খুব কমই ছিল। তাই অনেকদূর পর্যন্ত দেখতে পেলাম।"

"মনে হল, তেজগাঁও বিমানবন্দর, মোহম্মদপুর, রায়েরবাজার, আজিমপুর, পিল খানা, ইউনিভার্সিটির হল - সব জায়গায় আগুন জ্বলছে। আগুনের বলের মত কি সব যেন মাথার উপর এক দিক থেকে অন্য দিকে ছুটে যাচ্ছে।"

"ভয়ে মাথা নিচু করে, ইট ধরে ছাদে উঠলাম। চারিদিক অন্ধকার, কিন্তু আগুনের লাল আলোয় থেকে থেকে কোথায় উঠছি, তা দেখছিলাম। আমি একা। মনে হলো, আগুনের বলগুলো আমার মাথার উপর এই এখুনি পড়বে।"

"কুঁজো হয়ে পতাকার কাছে গেলাম। রাস্তায় তখনও মাইকে বলে যাচ্ছে, "পতাকা খুলুন"। আমি কাঁপছি। বাবা নীচে দাঁড়িয়ে চাপা গলায় বললেন, "তাড়াতাড়ি কর।"

"মনের ইচ্ছার বিরুদ্ধে পতাকাটি কাঁপা হাতে খুলে নিয়ে নিচে আসলাম। চারিদিকের আগুন আর বিকট শব্দ পরিবেশটিকে কেমন যেন যুদ্ধক্ষেত্র বানিয়ে দিয়েছিল।"

চুয়াডাঙ্গায় একটি ভবনে বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানো হচ্ছে, ১৯৭১।

ছবির উৎস, Getty Images

ছবির ক্যাপশান,

চুয়াডাঙ্গায় একটি ভবনে বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানো হচ্ছে, ১৯৭১।

বিবিসি বাংলাকে নাজমা কবির বলছিলেন, "কষ্ট হচ্ছিল পতাকাটা নামাতে, কিন্তু সবাইকে বাঁচাতেই কাজটা করতে হয়। "

"এটা যে কি ধরণের কষ্ট বোঝানো যাবে না। এবং পরের নয় মাস যেন এই অপেক্ষাটাই ছিল - কবে আবার আমার সেই পতাকাটা ওঠাতে পারবো।"

"সেই উত্তেজনা, এবং ছাদে উঠে যে দৃশ্য দেখেছিলাম - তা আমার এখনো চোখে ভাসে।"

বাংলাদেশের প্রথম পতাকা ওড়ানোর আনন্দ

বাংলাদেশের প্রথম পতাকা এখনকার চাইতে অন্যরকম দেখতে ছিল।

সবুজের মধ্যে লাল বৃত্ত, তার মধ্যে সোনালী রঙে বাংলাদেশের মানচিত্র।

"সেই পতাকা যখন ওড়ানো হয় তখন তো আমাদের সাংঘাতিক গর্ব হচ্ছিল। আমার বড় ভাই পতাকা লাগিয়েছিলেন" - বলছিলেন নাজমা কবির।

নাজমা কবিরের বাড়ি থেকে দেখা যাচ্ছে তখনকার নির্মাণাধীন সংসদ ভবন

ছবির উৎস, ছবি: নাজমা কবিরের সৌজন্যে

ছবির ক্যাপশান,

নাজমা কবিরের বাড়ি থেকে দেখা যাচ্ছে তখনকার নির্মাণাধীন সংসদ ভবন

"আমরা সবাই খুব খুশি - কারণ সেই পতাকাটা বানানোটাও ছিল এক আনন্দ। একেবারে নিজের হাতে সবাই সে পতাকা উঠিয়েছিলাম।

২৫শে মার্চ ছিল নাজমার ছোটবোনের জন্মদিন।

"বাড়িতে জন্মদিন পালন করা হয়েছিল, অনেকে এসেছিল - একটা ফুর্তিতেই ছিলাম। আমাদের একমাত্র ভাই, বড় ভাই - তিনি তার বন্ধুদের নিয়ে কোথায় যেন গেলেন।"

"আমরা যখন ঘুমাতে গেছি, তখন রাত সাড়ে এগারোটা-বারোটার দিকে বাবা-মা খেয়াল করলেন - কেমন যেন কিছু শব্দ হচ্ছে।"

নাজমা কবিরদের বাড়িটা ছিল একেবারে বড় রাস্তার ওপরই।

উঁকি দিয়ে তার বাবা দেখলেন, কিছু ছেলে রাস্তায় নানারকম জিনিস কাঁটাতার এসব দিয়ে ব্যারিকেড দেবার চেষ্টা করছে। তার কিছু পরই খুব গোলাগুলি শুরু হলো।

নাজমা কবির বলছিলেন, পরে তারা বুঝতে পেরেছিলেন যে অল্পদূরেই শেখ মুজিবর রহমানের বাড়িতে তাকে আটক করার জন্য যে পাকিস্তানী সেনা অভিযান চলছিল, সেখানেই গোলাগুলি হচ্ছিল।

ট্রাক্টরে বাংলাদেশের পতাকা লাগিয়ে যাচ্ছেন একদল মুক্তিযোদ্ধ।, ১৯৭১। ফাইল ছবি

ছবির উৎস, Getty Images

ছবির ক্যাপশান,

ট্রাক্টরে বাংলাদেশের পতাকা লাগিয়ে যাচ্ছেন একদল মুক্তিযোদ্ধ।, ১৯৭১। ফাইল ছবি

"মনে আছে এক ভয়ংকর অনিশ্চয়তা সবাইকে তখন গ্রাস করছে। জানি না কোথায় কি হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকে কি আসলেই ধরে নিয়ে গেছে না তাকে মেরে ফেলেছে, সেই জল্পনাই হচ্ছিল।"

তিনি বলছিলেন, তারা তখন বুঝতে পারেন নি, কিন্তু রাস্তায় ব্যারিকেড দেবার চেষ্টা করছিলেন যারা তাদের মধ্যে তার বড় ভাইও ছিলেন।

গুলির মুখে তারা সবাই রাস্তার পাশের ড্রেনে লুকিয়ে ছিলেন, সকাল হবার পর তিনি ঘরে ফেরেন।

পাকিস্তানি সেনারা দেখাতে চাইতো যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক

মুক্তিযুদ্ধের পুরো নয় মাসই নাজমা কবিরের পরিবার ধানমন্ডির সেই বাসাতেই ছিলেন।

কয়েকবার পাকিস্তানি সৈন্যরা তাদের বাড়ি তল্লাশি করতে এসেছিল। নাজমা কবিরের বড় ভাই এবং বোন তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। তাই তাদের পরিবারের ওপর নজর রাখা হচ্ছিল।

নাজমা কবির লিখেছেন, "বাবাকে দেখেছি, তার উঠতি বয়সী তিন কন্যা আর এক ছেলেকে নিয়ে কত মানসিক চাপ, অনিশ্চয়তার যন্ত্রণায়, কত অস্থিরতায় দিন কাটিয়েছেন। মা কত আশা, কত স্বপ্ন নিয়ে ছেলেমেয়েদেরকে কাছে নিয়ে স্বাধীন হবার দিন গুনতেন।"

ছবির উৎস, ছবি নাজমা কবিরের সৌজন্যে

ছবির ক্যাপশান,

নাজমা কবিরের সংগ্রহে এ্যান্টনি ম্যাসকারেনহাসের ছবি ও অটোগ্রাফ: যিনি প্রথম আন্তর্জাতিক সংবাদপত্রে লিখেছিলেন ২৫শে মার্চে ঢাকার গণহত্যার কথা

"পাকিস্তানী আর্মিরা সব স্বাভাবিক বলে চালাতে চাইতো। কিন্তু রাতে যখন লুকিয়ে লুকিয়ে রেডিও তে "চরমপত্র" শুনতাম, তখন বুঝতাম, যুদ্ধ চলছে। আবার ওদিকে যখন স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি খুলে দিয়ে আমাদেরকে যেতে বলতো, তখন যেন যুদ্ধ ভাবটা থাকতোনা। বন্ধুদের সাথে দেখা হবে। সে আনন্দেই যেতাম। কিন্তু সব যেন কেমন অস্থির লাগতো।"

"আমরা মুক্তি যোদ্ধাদের জন্য ঔষধ, কাপড় চোপড়, শুকনা খাবার তৈরি করে রাখতাম। একদল এসে উপকরণ দিয়ে যেত, আবার আরেক দল এসে তৈরি জিনিস নিয়ে যেত। কোথায়, কিভাবে, কাদের জন্য কিছুই জানতাম না। শুধু কাজ করে যেতাম। ভাইদের সাহায্য করতাম।"

স্বাধীনতার পর আবার উড়েছিল সেই পতাকা

নাজমা কবিরের বড় ভাই একাত্তরের ডিসেম্বর মাসে ঢাকার কিছু ছবি তুলেছিলেন - যা ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন নাজমা কবির।

"এর কিছুদিন পরেই দেশ স্বাধীন হলো। শত সহস্র শহীদের রক্তের বিনিময়ে ডিসেম্বর মাসের ১৬ তারিখে দেশে বিজয়ের আনন্দ এলো। আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ।"

বিজয়ের পরই সেই নামিয়ে ফেলা পতাকা আবার ওড়ানো হলো নাজমা কবিরদের বাড়িতে।

"এবার নিজেই দোতলার ছাদে টাঙ্গিয়ে দিয়ে আসলাম লাল সবুজের পতাকা ।"

"আহা, কি আনন্দ ! কি চরম পাওয়া। মনের ভিতরে যে যন্ত্রণাটি এতদিন লুকিয়ে ছিল, তা' মুক্তি পেল।"

Share:

FOLLOW US

Photos

3-tag:Photos-65px

polystudio

3/Photography/post-per-tag
Powered by Blogger.

Comments

3-comments

Wikipedia/ Google

Search results

LATEST

3-latest-65px

Facebook, Google

Poly Studio Logo

Search This Blog

Blog Archive

POPULAR-desc:Trending now:

Fashion

3/Fashion/post-per-tag

Portfolio

4-tag:Portfolio-500px-mosaic

Beauty

3/Beauty/post-per-tag

About

This just a demo text widget, you can use it to create an about text, for example.

Featured Video

Videos

3/Food/recent-videos

Technology

3/Technology/small-col-left

Sports

3/Sports/small-col-right

Fashion

3/Fashion/big-col-right

Business

3/Business/big-col-left

Header Ads

Header ADS

Header Background

Header Background
Header Background Image. Ideal width 1600px with.

Slider Widget

5/recent/slider

youtube

youtube
photo creator PC

Advertisement

Photos

3-tag:People-1110px-slider

Breaking News

Nature

3/Nature/post-grid

Comments

3/recent-comments

SEARCH

Subscribe Us

Pages - Menu

Pages - Menu

Popular

SEARCH

Blog Archive

Search This Blog