------------------------ Welcome to my site

Owner MD. Shek Rostom

Thursday, June 4, 2020

নতুন ‘স্বাভাবিকতার’ কালে স্বাগত

ছবি: এএফপিছবি: এএফপিপরিবর্তন সবাই চায়। কিন্তু পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে নতুন একটা অবস্থানে বা গন্তব্যে যাওয়ার যাত্রাটা সুখকর হয় না। কারণ, পথটা খুব অস্বচ্ছ ও অনিশ্চিত। এই অনিশ্চয়তা নির্ভর করে দুটো বিষয়ের ওপর—সঠিক তথ্য আর বিশ্বস্ত পথপ্রদর্শক। গণমাধ্যমগুলোকে ট্রাম্প বলেন ‘ফেক নিউজ’ বা ভুয়া খবর প্রচারকারী। বিশ্বজুড়ে সংবাদমাধ্যমগুলো তথ্যের নিম্নমান এবং তথ্য নিয়ে রাজনীতি খেলার কারণে অনেক আগেই মানুষের আস্থা হারিয়েছে। সংবাদমাধ্যমের অতিরঞ্জিত সংবাদে অতিষ্ঠ মানুষ ফেসবুকমুখী হয় খবরের জন্য। সেখানে অবাধে ও অগাধে ‘ভুয়া’ খবর প্রচার ও প্রকাশের কারণে মানুষ এখন সত্য ও মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। তাই এই অনিশ্চয়তার সময়ে সঠিক তথ্যের জন্য কাঙাল মানুষ জানতে চায়, আসলেই করোনার প্রভাবে ও করোনার আড়ালে কী হচ্ছে। কারণ এই তথ্যের ওপর নির্ভর করছে তাদের জীবন।
এমন অনিশ্চিত সময়ে মানুষ একজন পথপ্রদর্শক খোঁজে যে আশ্বাস দেবে সুদিনের; যে এমন দুর্দিনে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে, হাল ধরে নিয়ে যাবে স্থিতিশীল ভবিষ্যতের দিকে। আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের এত যুগের দুর্নীতি ও অপরাজনীতি চর্চায় মানুষ এখন মানুষের ওপর বিশ্বাস করা ছেড়ে দিয়েছে। কোনো প্রণোদনা এখন আর নিঃস্বার্থ মনে হয়ে না, কোনো প্রতিশ্রুতিতে এখন আর আস্থা হয় না। এই অনিশ্চিত সময়ে এই দায়িত্বহীন নেতা ও ভুয়া তথ্যের ভিড়ে মানুষ এখন দিশেহারা।
এমন দিগবিদিকজ্ঞানশূন্য অবস্থায় দুটি রাস্তা খোলা থাকে। এক. মানুষ অদৃশ্যের কাছে নিজের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে স্বস্তি পায়। দুই. মানুষ তার পূর্বপুরুষদের মধ্যে আশ্রয় খোঁজে। মানুষ তখন ধর্ম কিংবা জাতীয়তাবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে উঠে। তাতেও যখন অনিশ্চয়তা দূর হয় না, তখন হতবিহ্বল হয়ে পড়া মানুষ প্রশ্ন করায়ও বারণ করে, আবার উগ্রও হয়ে উঠতে পারে। যেকোনো বিষয়ে বা মানুষের উগ্র পর্যায়ের বিশ্বাস তার অপ্রাপ্তিগুলো থেকে তৈরি যন্ত্রণার বহিঃপ্রকাশ। যেন জোর করে নিজের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা। এই দুয়ের মাঝে আবার কেউ কেউ আটকা পড়ে যায়। বোঝে না কোন দিকে যাবে, কাকে বিশ্বাস করবে বা কী করবে? তারা অপেক্ষা করে। এই মধ্য পর্যায়ের মানুষগুলো হলো উল্লিখিত দুই ধারার লক্ষ্যস্থল। উভয় ধারাই চায় সদস্য বাড়িয়ে নিজেদের দল ভারী করতে। এসবের মধ্যে অনেকে অনেক সময় মানসিক ভারসাম্য রক্ষা করে চলতে পারে না। যার ফলস্বরূপ বিশ্বজুড়ে পারিবারিক নির্যাতন ও শিশু নির্যাতন বেড়ে যাচ্ছে এবং প্রমাণিত হচ্ছে, বাড়ি আসলে সবার জন্য সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়স্থান নয়।
এক-দুই সপ্তাহ করে করে দুটি মাস মানুষ স্বাভাবিক জীবন থেকে বিরতি নিয়েছে। সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে, এমন প্রতিশ্রুতি কেউ দেয়নি। লকডাউনের পর জীবন কেমন হবে, সে সম্পর্কে ধারণাও কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। মানুষ এক এক করে বের হচ্ছে তার দুমাস আগের জীবন ফিরে পেতে। যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন তাঁরা নতুন চাকরি খুঁজছেন। যাঁদের চাকরি আছে তাঁরা প্রতিটি মুহূর্ত কাটাচ্ছেন চাকরি হারানোর ভয়ে। তরুণ জনশক্তি দুই মাস ধরে তাদের জীবন গড়ার স্বপ্নে লাগাম ধরে বসে আছে। তারা এখন উদ্বিগ্ন। বাজারে লেনদেন বা বেচা-কেনার মন্থর গতি। কেউ বলছেন মহামারি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে, আবার কেউ বলছেন লকডাউন শেষ। যে যা-ই বলছেন, খুব দৃঢ়তার সঙ্গে বলছেন যেন তাঁর তথ্যটাই সঠিক। তবে আসল কথাটা হলো, আমরা আসলে জানি না কী হতে যাচ্ছে। আমাদের জীবন হয়তো আর কখনোই আগের মতো হবে না।
লকডাউনের এই তৃতীয় মাসে এসে আমরা এই নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে চলা শুরু করে দিয়েছি, যাকে অনেকেই বলছেন দ্য নিউ নরমাল বা ‘নতুন স্বাভাবিকতা’। এই নতুন স্বাভাবিকতা কেমন?
মানুষ এখন নিজের সঙ্গে, পরিবার, আত্মীয় ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে আবার নতুন করে যেন সম্পর্ক তৈরি করা শুরু করেছে। মানুষ মানুষের জন্য চিন্তা করছে, অন্যের কষ্টে এগিয়ে আসছে। কারও করোনা হয়েছে শুনলে তার খবরাখবর নিচ্ছে, কেউ চাকরি হারিয়েছেন শুনলে তাঁকে সাহায্য করার চেষ্টা করছে। মানুষ বাড়িতে থেকে কাজ করছে, সুযোগ পাচ্ছে দুপুরগুলোকে উপভোগ করার বা কাজের ফাঁকে একটু গান শুনে নিজেকে অনুপ্রাণিত রাখার। তবে এর সঙ্গে নতুন সমস্যাও যুক্ত হয়েছে। বাড়ি কর্মক্ষেত্রে পরিণত হওয়ায় কাজ ও জীবনের মধ্যেকার ভারসাম্যটা যেন উঠেই গেছে। মানুষ এখন আর মানুষের বাড়িতে আমন্ত্রিত নয়। মানুষের মনে করোনার ভয় মানসিক চাপ অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। অনেকের আচরণ অসুস্থতার পর্যায়ে চলে গেছে।
এখনই সঠিক ও জনমুখী সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে এই বিশাল জনসংখ্যা নিয়ে আমরা পুরো জাতি মুখ থুবড়ে পড়ব। তৈরি পোশাক ও প্রবাসী আয়—অর্থনীতির দুই মূল চালিকাশক্তিই ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই মহামারির ফলে। আমরা নতুন একটি বিশ্ব ব্যবস্থায় পা দিয়ে ফেলেছি। এখন সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি, বাজার, শিক্ষা—সবকিছুতেই পরিবর্তন আসবে।
রাজনৈতিক অঙ্গনে কী চলছে, তার সম্পর্কে আমাদের ধারণা খুব কম। তথ্যের উৎস গণমাধ্যম, তারা নিজেরাই বিভিন্ন আইন-কানুন, নিয়ম-নীতির বেড়াজালে বাঁধা। মানুষের ওপর নজরদারি বেড়েছে অনেক বেশি। শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে মানুষের ধারণা হচ্ছে কম। দেশের ১৬ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে ১০ কোটি মানুষই এখন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। এই বিশাল জনসংখ্যা ইন্টারনেটে কী করছে? মুঠোফোনেই এখন স্কুল, এখানেই অফিস, এখানেই বিনোদন। তাই মুঠোফোন এখন আর বাস্তবতা থেকে আড়াল হওয়ার জায়গা নয়। এই মুঠোফোনই হলো নতুন বাস্তবতা, নতুন পৃথিবীর জানালা।
১০ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর মধ্যে চাকরি হারানো মানুষগুলোও আছেন। বিভিন্ন সাইটে ঘুরে ঘুরে সময় নষ্ট করার অর্থ হলো রাস্তা-ঘাটে পার্কে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়ানো। নিজের গন্তব্য নিজেই নির্ণয় করুন। জাতি হিসেবে কিংবা মানুষ হিসেবেই হয়তো আমাদের এক সহজাত প্রবৃত্তি হলো, আমরা বিপদে পড়লে নিজেকে অসহায় মনে করি আর অপেক্ষা করি কোনো এক ‘সুপার হিরো’ আসবে আমাদের রক্ষা করতে। বাস্তবতা হলো, নিজের দায়িত্ব নিজেকেই নিতে হবে সবার আগে।
এ সময়কার বিখ্যাত পদার্থবিদ মিশিও কাকু বলেন, সামনের দিনে বাথরুমগুলো হবে আমাদের স্বাস্থ্যকেন্দ্র। শরীরের তরল পরীক্ষা করে কমোড আমাদের জানাবে আমাদের শরীরের সব উপাদানের ভারসাম্য ঠিক আছে কি না। মানুষের চশমায় মাইক্রোচিপ বসানো থাকবে, যা সারাক্ষণ চোখ ও মনোযোগ নিরীক্ষা করে, মস্তিষ্কের ভাবনা বুঝে আমাদের সামনে সমাধানের উপায় জানাবে। বিখ্যাত ইতিহাসবিদ ইউভাল নোয়াহ হারারি বলেন, আগামী সময়টাতে মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু হবে রোবট। কারণ মানুষের কর্মক্ষেত্রের বেশির ভাগ কাজ তারাই দখল করবে। রোবটকে এতটাই উন্নত করার চেষ্টা করা হচ্ছে যেন তারা মানুষের অনুভূতিও বুঝতে পারে। রোবটের সঙ্গে বিয়ে, সে তো এখন পুরোনো খবর।
মহাকাশে এখন প্রাইভেট কোম্পানির রকেট চলছে। অন্যান্য রাষ্ট্র যেভাবে নিজেদের উদ্ভাবনের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে তাতে আর কয়েক বছরের মধ্যে মহাকাশে ভিড় হয়ে যাবে, চাঁদ ও মঙ্গলে জায়গা দখলের যুদ্ধ শুরু হবে। আমাজান ও গুগলের মতো কোম্পানি এখন মহাকাশে বিনিয়োগ করছে।
সমাজ, বিজ্ঞান, বিনোদন, যোগাযোগ—সব ক্ষেত্রে উদ্ভাবনের এমন রেনেসাঁর সময়ে আমরা কোথায় অবস্থান করছি? আমরা এই প্রতিযোগিতায় কেন অংশগ্রহণ করছি না। আমরা কেন নিজেদের পিছিয়ে রেখেছি নিম্ন আয়ের কাজগুলো করার জন্য? আমরা জাতি হিসেবে নিজেদের নিয়ে অনেক গর্ব করতে পারি কিন্তু আমাদের বৈশ্বিক অবস্থানটা কোথায় এবং কেমন, সেটাও দেখতে হবে এই বৈশ্বিক শাসনের যুগে।
এই নতুন বিশ্বব্যবস্থায় নিজেদের অবস্থার উন্নতি করতে নিজেদের ‘ফেক’ দাম্ভিকতা থেকে বেরিয়ে এসে বাস্তবমুখী হতে হবে। নিজেদের দুর্বলতাগুলো শুধরে, নিজেকে সময়ের উপযোগী করে প্রস্তুত করাই ‘নতুন স্বাভাবিকতা’। ১০০ মিলিয়ন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী অন্যের জীবনে উঁকি না মেরে সময়োপযোগী কোনো কাজ বা দক্ষতা শিখুন এই সুযোগকে ব্যবহার করে। আমাদের হাতেই আছে আমাদের ভবিষ্যৎ। তা গণনার জন্য জ্যোতিষীর প্রয়োজন নেই। আমরা সবাই আমাদের ভাগ্যের লেখক। নিজেদের দায়িত্বটুকু কেবল বুঝে নেওয়ার পালা। ‘নতুন স্বাভাবিকতা’ হলো তরুণদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। ‘নতুন স্বাভাবিকতা’ হলো জনগণের ওপর বিনিয়োগ করে, সব সুযোগ-সুবিধা দিয়ে, প্রযুক্তির এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা। দারিদ্র্য অর্থনৈতিক নয়। ‘নতুন স্বাভাবিকতায়’ দারিদ্র্য হচ্ছে প্রযুক্তিগত ভাবে পিছিয়ে থাকা।

Share:

0 Comments:

Post a Comment

FOLLOW US

Photos

3-tag:Photos-65px

polystudio

3/Photography/post-per-tag
Powered by Blogger.

Comments

3-comments

Wikipedia/ Google

Search results

LATEST

3-latest-65px

Facebook, Google

Poly Studio Logo

Search This Blog

Blog Archive

POPULAR-desc:Trending now:

Fashion

3/Fashion/post-per-tag

Portfolio

4-tag:Portfolio-500px-mosaic

Beauty

3/Beauty/post-per-tag

About

This just a demo text widget, you can use it to create an about text, for example.

Featured Video

Videos

3/Food/recent-videos

Technology

3/Technology/small-col-left

Sports

3/Sports/small-col-right

Fashion

3/Fashion/big-col-right

Business

3/Business/big-col-left

Header Ads

Header ADS

Header Background

Header Background
Header Background Image. Ideal width 1600px with.

Slider Widget

5/recent/slider

youtube

youtube
photo creator PC

Advertisement

Photos

3-tag:People-1110px-slider

Breaking News

Nature

3/Nature/post-grid

Comments

3/recent-comments

SEARCH

Subscribe Us

Pages - Menu

Pages - Menu

Popular

SEARCH

Blog Archive

Search This Blog